যে পাথরে ফুল ফুটেছে-২ [রোমান্টিক/সুপারহিরো]


 


খুব উদ্দাম গতিতে রবিন আকাশে উড়ে বিস্মিত হয়ে গেল। নিজেকে প্রথমবারের মতো ফ্লাইট সিচ্যুয়েশনে পেয়ে খুবই উদ্বেলিত হয়ে গেল সে। সে কল্পনাও করতে পারেনি যে তার সাথে এমন ঘটনা ঘটতেও পারে। প্রথমবারের মতো মাটিতে ল্যান্ডিং করার সময়, আশেপাশের মাটি বা যে সব শক্তপোক্ত সারফেস এর  স্থান সেগুলো সব ভেঙ্গে গেল। অবশ্য অতটা গভীরেও যায়নি সে তাই বেশি ক্ষতি হলো না।



মনে মনে ভাবল পরেরবার থেকে নিজেকে কন্ট্রোলে রাখতে হবে। এখন যেতে হবে তার। এখন যেতে হবে তার ফার্মেসিতে।



ফার্মেসি থেকে ঔষধ নিয়ে সে বাসায় ফিরে গেল। বাবাকে ওষুধপত্র খাইয়ে দিয়ে খেতে বসলো। তার আম্মু নীরব ভাব দেখে জিজ্ঞেস করল কিরে কি হয়েছে তোর?



সে বললো না তেমন কিছু হয়নি তো।



অদ্ভুতভাবে তার ছোট বোন এবং তার মা তার দিকে তাকিয়ে আছে। হয়েছেটা কি ছেলেটার?



জীবনে যদি কারো কখনো ঝড় আসে সেটা কি সহজেই থেমে যায়? এটা নিয়ে সারাটা রাত সে চিন্তা করলো। রাতের শেষ দিকে ঘুমিয়ে গেল। সে স্বপ্নে দেখল সেই লোকটা যার সাথে তার দেখা হয়েছিল সে বলল তাকে যে, তুমি এখন থেকে নিজেকে সবসময় সাবধানে রাখবে। তোমার শক্তি যেন কেউ অন্য কারো গোচরে না যায়।



পরদিন রবিন ভার্সিটির  দিকে রওনা হয়েছে। মতিঝিল কমার্শিয়াল এরিয়া এই আশেপাশে চারিদিকে জ্যাম লেগে আছে। রিক্সাতে সে বসে বসে প্রহর গুনছে। বাস থেকে নেমেছে সবে মাত্র। 



রিক্সাতে ওঠার দু মিনিটে হয়নি হঠাৎ করে পাশ থেকে একটা রিকশা থেকে কে যেন চিৎকার করে তাকে ডাক দিল।



 এই যে, এই যে শুনছেন।


প্রশ্ন কারীর বাক্য মানে বৃহত্তম হয়ে এসে তাকিয়ে দেখলো গত রাতের মেয়েটা।



আরে আপনি। 



মেয়েটা তখন বলল আপনি জলদি আপনার রিক্সাটাকে ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে আপনি উঠুন আপনার সাথে কথা আছে। 



রবিন বলল, “কেন আমি আপনার সাথে কি করেছি? আমি তো আপনার সাথে কিছু করিনি।”



মেয়েটা বলল, “আপনি যদি এখন এই মুহূর্তে কোন কথা না বলে, আমার এখানে না উঠেন তাহলে আপনার কিন্তু খবর আছে। আমি লোক জড়ো  করব।”



রবিন বুঝতে পারল অবস্থা বেগতিক। এখনই যদি না নেমে মেয়েটার রিকশায় না উঠে তাহলে কিন্তু তার খবর আছে। 



রিক্সাতে ওঠা মাত্রই মেয়েটি বলল, “হ্যালো আমার নাম রিয়া।”



রবিন বলল, “আরে আপনার র আমার ও র। আমার নাম রবিন।”



মেয়েটার সাথে কথা বলে যা বুঝল রবিন মেয়েটা ইন্টারে পড়ছে। মেয়েটাও রবিনের বৃত্তান্ত শুনলো বয়স বেশি না। মাত্র ২৩। 


রিয়া তাকে জিজ্ঞেস করল  আচ্ছা, গতকাল রাতে কি করলেন আপনি? উড়ে গেলেন কিভাবে? আপনি কি ভাই জিন না ভুত কোনটাই না? নাকি মানুষ কোনটা?



রবিন চুপ মেরে বসে রইল। 



রিয়া বলল দেখুন আমি অভয় দিচ্ছি। ভয় পাবেন না।



হঠাৎ করেই রবিন তখন সাহস পেয়ে বলল আসলে আমি কালকে একটা অদ্ভুত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। পুরো ঘটনাটা খুলে বলল।



রিয়া  সমস্ত ঘটনাটা শুনে বললো মাই গড আপনি কি করেছেন?



আসে আসে এরকম ঘটনা, জীবনে বহু বার আসে মানুষের।



সেদিন একটা পার্কে বসে অনেকক্ষণ ঘন্টা পর ঘন্টা তাদের কথা হল। বিকেলের টাইমটাতে রিয়া হঠাৎ করে বলল আহা আমার তো বাসায় যাওয়ার টাইম হয়েছে। 



রবিন বলল আপনাকে নামিয়ে দেই।



রিয়া বলল, “নামিয়ে দিই মানে কি? এটা কোন ধরনের কথা? আপনার কি প্রাইভেট জেড আছে নাকি হেলিকপ্টার?”



রবিন বলল, “আমি নিজেও তো একটা হেলিকপ্টার। আসুন না আমার পিঠে চড়ুন।” 



রিয়া বলল, “কোথা থেকে উঠবেন? আমার তো সমস্যা নেই। সমস্য হবে আপনার।”



রবিন বলল, “ আমার সাথে আসুন।”



রিয়া এবং রবিন দুজন একটু ঝোপের আড়ালে গিয়ে দাঁড়ালো। হঠাৎ করে রবিন বলল, “উঠুন!”



রিয়া রবিনের পিঠে চলল। প্রচন্ড বাতাসের গর্জন করে রবিন উড়ে চলে গেল রিয়াদের বাড়ির সম্মুখে। মাত্র দু মিনিটে পৌছে গেছে।



রাতে কথা হবে, বলে রিয়া রবিনের দিকে মুগ্ধতার দিকে তাকালো। রবিন ও বললো, ঠিক আছে।



দুজনের ফোন নাম্বার তো আগেই নেওয়া হয়েছে। রবিন রিয়ার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলো।

Post a Comment

Previous Post Next Post