জাফর: দ্য চেজিং গ্রউন্ড

 


জাফর বেশ কিছুক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছে রাস্তার এ মোড়টাতে। তার চারপাশে অজস্র গাড়ি। এ  সময়, চতুর্দিক থেকে ট্রাফিকের একটা হালকা চাপ দেখা যায় যার কারণে  বোঝা যাচ্ছে না সবকিছু।  কিন্তু তারপরও ঠিক ওদিক থেকে একটা লোককে আসতে দেখা যাচ্ছে। এই লোকটাই সেই লোক যার জন্য তার হেডকোয়ার্টার থেকে মানে উপর থেকে একটা নির্দেশ এসেছে যে তাকে ধরে নিয়ে যেতে হবে।



লোকটার কাছেই আছে ভয়ংকর সেই মারণাস্ত্র। শহরে উদয় হয়েছে এক নতুন মাফিয়া। আর এই লোকই হচ্ছে সেই মাফিয়ার লোক। লোকটার নাম তাবরেজ।



তাবরেজ মোটেই সাদাসিধা টাইপের মানুষ নয়। বোঝা যাচ্ছে সেও কম না। স্থির দৃষ্টিতে ওপাশ থেকে আস্তে আস্তে তার দিকে তাকিয়ে হেঁটে আসছে।



বামদিকে মানে মুখ থেকে ঠিক হাতের বাম দিকে  লোকটা হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে পড়ল। শিরদাঁড়া করে দিয়ে সে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। কিছু একটা করতে যাচ্ছে লোকটা।  ঠিক পকেট থেকে বের করল কিছু একটা। সেই জিনিসটা মাটিতে রাখল।



এতটাই অবাক হয়েছে জাফর জিনিসটা দেখে, যে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। লোকটা সাথে সাথে তার হাতে থাকা একটা রিমোট কন্ট্রোল টিপে দিল। না কিছুতো হচ্ছিল না। কিন্তু ভুল ভাঙলো জাফরের কিছুক্ষণের মধ্যেই। আবার মনে হতে  লাগলো  কোন কিছু একটা হতে যাচ্ছে।



এবং সবকিছুই হঠাৎ করে ছোট হয়ে ওটার ভেতর ঢুকে যেতে লাগলো। মানে, পৃথিবী খেয়ে ফেলার যন্ত্র!



লোকটা হুট করে জাফরকে দেখে দু কাঁধ শ্রাগ করে  শুরু করে সামনের দিকে দ্রুত গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। জাফর সাথে সাথে তার কোটের পকেট থেকে রিভলবার  বের করে বলল,  "হোল্ড অন!"



লোকটা দু হাত উপরে তুলে পেছন ফিরে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল, "আস্তা লা ভিস্তা।"



লোকটার সামনে হুট করে উদয় হল একটা নতুন গাড়ি। গাড়িটাকে আগে কখনো দেখেনি জাফর। লোকটা নিজেকে গাড়ির ভেতরে সেঁধিয়ে  নিলো এবং তাকে ফেলে সামনের দিকে চলে যেতে লাগলো।



জাফর। এজেন্ট জাফর দমে যাওয়ার  পাত্র নয়। এবার জাফর কিছু না করে পারল না। সে সাথে সাথে তার কাঁধের ব্যাগটা হাতে নিয়ে তার ভেতর থেকে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মোড়ানো জিনিস বের করে আনল। এটমিক মোটর ইঞ্জিন! 



এরপর এক রিকশাওয়ালাকে থামিয়ে চেইনের সাথে এটমিকভমোটর ইঞ্জিন লাগিয়ে দিল। দ্রুত গতিতে সেই মোটরের ইঞ্জিন টা কাজ দেখাতে শুরু করল কন্ট্রোল একটা সিলিন্ডারও সেখানে ঠিক করতেই নস বাটনে  ক্লিক করলো। রিক্সাটা একেবারে গাড়িটার  সামনে গিয়ে পড়লো।



পিঠে পেছন থেকে একটা লাইট ওয়েট সাবমিশন গান হাতে নিয়ে গাড়িটার চাকা বরাবর ট্রিগারটিপে দিল। বুম করে একটা ছোট্ট অটোমেটেড টাইটেনিয়াম বল ছুটে গেলো। সেই বুম আওয়াজে  জায়গাটার চারপাশ বিদীর্ণ হয়ে গেল। বল  গাড়ির সাথে লাগার সাথে সাথেই সুপারসনিক আওয়াজে চুরমার হয়ে গেল চাকা গুলো।




হঠাৎ করে সেই গাড়িটা একটা উড়ন্ত যানে পরিণত হলো। জাফর বিষয়টা দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। এটা কি হলো কিছুই বোঝা গেল না। জাফর এতে বিন্দুমাত্র টলল না। ভাবল তার চেয়ে এরা এতো এগিয়ে!  এদের নিশ্চয়ই অনেক বড় ধরনের বিনিয়োগ আছে। যার কারনে তারা এত বড় সক্ষমতা দেখাতে পেরেছে। হাতে তার সেই রিমোট কন্ট্রোল। সে রিক্সাকে ফেলে নীচে নামলো। রিমোটের বাটনে চাপ দিয়ে জেট মেশিনটা আলাদা করে সেটাকে উড়ন্ত যানে পরিণত করল। এটা এখন এমন একটা উড়ন্ত যান যা চলে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে। বলা যায় আলোর চেয়ে বেশি গতিতে। রিক্সাওয়ালা এমনিতেই অবাক হয়ে আছে ।  আরো অবাক হল আরো একটা উড়ন্ত যান সামনের দিকে  ধাবিত হলো তার চোখের সামনে।




জাফরের লুকানো সেই উড়ন্ত যানটিকে দেখে বোঝাই যাচ্ছে প্রযুক্তিতে সমানে সমান। তাবরেজ দমে যাওয়া পাত্র নয়। তাকে অবাক করে দিয়ে সামনে থেকে উদয় হলো তাবরেজের গাড়িটা। সামনে থেকে বিশাল একজোড়া সাব মেশিনগান বের করল গাড়ির ভেতরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছিল এবং সেটা তাক করে ধরে রাখল তখন তাবরেজ বুঝতে পারল আজকে তার খবর আছে। গাড়িটিকে নিচে নামিয়ে আনলো।



ভূমিতে সাথে সাথে তাবরেজ ল্যান্ড করালো। বিপদ আছে বলার অপেক্ষাই রাখল না। তাবরেজ দ্রুতগতিতে নেমে এলো। সারাটা সময় জাফর যেখানে তার পিছু নিয়ে এতোক্ষণ এসেছে সেটা অবিশ্বাস্য!



প্রযুক্তি যে এত দ্রুত এগিয়ে যাবে সেটা কল্পনার বাইরে। জাফর তাবরেজকে দুটো ঘুষি মেরে দিল মুখ বরাবর। তাবরেজ থমকে গেল। ছিল সবই চেজিং এর উপরে। কিন্তু এখন সরাসরি শরীরের উপর আঘাত এটা মেনে নেওয়া যায় না। 


তাবরেজ বেশ ব্যাথা পেয়েছে বোঝা যাচ্ছে। সাথে সাথেই সে ঘুষি মেরে বসে জাফরের পেটে। বাতাস বেরিয়ে গেল যেন জাফরের। জাফর সেটা সহ্য করতে পারেনি সে তখন রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাবরেজের ঘাড় বরাবর একটা রদ্দা মেরে দিল।



শুকৌশলী একজন মার্শাল আর্টিস্ট জাফর। সে সব রকমের কায়দা কানুন জানে। তাবরেজের দিকে মুখ করতে ভরসায় এক সেকেন্ডেরও বেশি সময় নিল না। সরাসরি তার বন্দুক তাক করে ধরে রাখলো। 



"এবার যদি সারেন্ডার না করিস, একেবারে খুলি উড়িয়ে দেবো।"



কন্ঠে প্রচ্ছন্ন হুমকি, দাঁত কিড়মিড় করছে জাফরের।সে এখন যা বলছে সেটা যেনো তেনো কথা। তাই তাবরেজ বুঝতে পেরে সারেন্ডার করল।


কিন্তু, খেলা কি এখানেই শেষ? না। দেখা হচ্ছে পরের গল্পে।

Post a Comment

Previous Post Next Post